চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘গ্রামীণ জনকল্যাণ সংস্থা’ নামের একটি কথিত বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিরুদ্ধে। সংস্থাটির ব্যবস্থাপক ও দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রোববার উপজেলা সমবায় কার্যালয় ও মতলব দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন একাধিক গ্রাহক।
ভুক্তভোগী গ্রাহক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকিরগাঁও এলাকার একটি বাড়ির নিচতলার দুটি কক্ষ ভাড়া নেন খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে গ্রামীণ জনকল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপক পরিচয় দেন। সেখানে সংস্থাটির কার্যালয় স্থাপনের জন্য একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন।
এরপর গত ১ মার্চ থেকে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। মো. রাসেল ও সাবিনা ইয়াসমিন নামের দুজনকে সেখানে কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেন খোরশেদ। রাসেলের বাড়ি চাঁদপুরের বাবুরহাট এলাকায় এবং সাবিনার বাড়ি ঢাকার গাজীপুর এলাকায়।
খোরশেদ আলমসহ ওই তিনজন মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক লোককে ১২০ টাকার বিনিময়ে সংস্থার গ্রাহক করেন। এরপর ১০ শতাংশ মুনাফা দেওয়ার কথা বলে ভুয়া রসিদের মাধ্যমে একেকজনের কাছ থেকে ১০ হাজার ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আমানত সংগ্রহ করেন। তিন বছর পর মুনাফাসহ আসল টাকা ফেরত দেওয়ারও অঙ্গীকার করেন তাঁরা। কিন্তু গত ২৫ মার্চ কাউকে কিছু না জানিয়ে ওই তিনজন পালিয়ে যান।
বিষয়টি জানাজানি হলে ২৭ মার্চ একাধিক গ্রাহক সংস্থাটির কার্যালয়ে এসে ভিড় করেন। তাঁরা সংস্থাটির কক্ষগুলো তালাবদ্ধ দেখতে পান। ওই তিনজনের মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ পান।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার চরনীলক্ষ্মী গ্রামের মাকসুদা বেগম বলেন, তাঁর কাছ থেকে রসিদের মাধ্যমে ১০ হাজার ৫২০ টাকা আমানত নিয়েছেন সংস্থাটির লোকজন। পরে তিনি জানতে পারেন, প্রতারণা করে তাঁদের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন তাঁরা। ধারকর্জ করে ওই টাকা আমানত রেখেছিলেন। টাকা ফেরত না পেলে সর্বস্বান্ত হতে হবে। এ অবস্থায় তাঁরা উপজেলা সমবায় কার্যালয় ও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গ্রামীণ জনকল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম এবং তাঁর ওই দুই সহকর্মীর মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ওই নামে তাঁর কার্যালয়ে কোনো সমিতি বা সংস্থা নিবন্ধিত হয়নি। এটি একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত করবেন।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাননি। পেলে আইনি পদক্ষেপ নেবেন।