অনলাইন ডেস্ক
অ্যালবাট্রস নামের সামুদ্রিক পাখি অনেকটা মানুষের মতোই সঙ্গী বাছাই করে। এই প্রজাতির পাখি সঙ্গী বা সঙ্গীনীর প্রতি দায়বদ্ধ। কিন্তু বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখেছেন, হাজার হাজার পাখিকে এখন সঙ্গী বা সঙ্গীনী ছাড়াই দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি রয়্যাল সোসাইটি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মহাসাগরের জলে উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য অ্যালবাট্রস পাখির জীবনে পরিবর্তন হচ্ছে। কারণ এই সময়ে তারা মাছ শিকারের জন্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। পাঁচজন বিজ্ঞানী একটি গবেষণার পর জানিয়েছেন, মূলত মাছ শিকার নিয়েই সঙ্গী বা সঙ্গীনীর সঙ্গে মনোমালিন্য হচ্ছে এই প্রজাতির পাখিদের। যার ফলে তারা আলাদা থাকছে।
উল্লেখ্য, অ্যালবাট্রস প্রজাতির পাখিরা মানুষের মতো সঙ্গী বেছে নেয়। তার পর সারা জীবন সেই সঙ্গীর সঙ্গেই থাকে। সঙ্গী বা সঙ্গীনীর প্রতি অ্যালবাট্রস সব সময় দায়বদ্ধ থাকে। তাদের বিবাহবিচ্ছেদও অনেকটা মানুষের মতোই। দুজনের মধ্যে যে কেউ অন্য সঙ্গী বেছে নিলে অপরজন সরে যায়।
সব থেকে বড় ডানাওয়ালা সামুদ্রিক পাখি অ্যালবাট্রস সমুদ্রের মাছ খেয়ে জীবন যাপন করে। প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরে দেখা যায় এই প্পজাতির পাখিদের। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার অকল্যান্ডে প্রায় ১৬ হাজার যুগল দেখা গিয়েছিল। তবে এখন সেই সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। বেশিরভাগ পাখি একা ঘুরছে, মাছ শিকার করছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন অ্যালবাট্রস পাখির জীবনচক্রে প্রভাব ফেলেছে। যার জেরে তারা সঙ্গী ছাড়াই থাকতে শুরু করেছে। এছাড়া প্রজননেও প্রভাব পড়ছে। ফলে কমে যাচ্ছে এই পাখির সংখ্যা।
বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, কোনো পাখি প্রজননে অক্ষম হলে তার সঙ্গী তাকে ছেড়ে চলে যায়। তার পরের মৌসুমে সেই পাখি নতুন সঙ্গী খুঁজে নেয়। তা না হলে এই প্রজাতির পাখির বিবাহবিচ্ছেদ বিরল ব্যাপার। এখন প্রজননে সক্ষম পাখিকেও ছেড়ে যাচ্ছে তার সঙ্গী।
বিজ্ঞানীদের দাবি, গত বছরের তুলনায় এবার অ্যালবাট্রস পাখির বিচ্ছেদের হার বেড়েছে আট শতাংশ। জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়া আর কোনো কারণ রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সামনেই প্রজননের মৌসুম। তা সত্ত্বেও এখন অকল্যান্ড দ্বীপে বহু পাখিকেই একা থাকতে দেখছেন গবেষকরা। যা চিন্তার ব্যাপার।
গবেষকরা বলছেন, সমুদ্রের পানি আগের থেকে উষ্ণ হয়েছে যার প্রভাব পড়ছে পাখিদের জীবনযাপনে। পাখিদের প্রজননেও এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে সামুদ্রিক পাখিদের জীবনে বড়সড় বদল এসেছে।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস