গরমে তরমুজ খাওয়া যেমন উপকারী তেমন এর দানাও পুষ্টিকর। খাওয়ার সময় তরমুজের দানা ফেলে না দিয়ে বরং জমিয়ে রাখুন। কারণ এই দানাতেও রয়েছে নানান উপকারিতা। ‘হেল্থশটস ডটকমে’ প্রকাশিত প্রতিবেদনে নয়াদিল্লির প্রাইমাস সুপার স্পেশালিটি হসপিটালের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুষ্টিবিদ অঙ্কিতা ঘোশাল এ বিষয়ে বলেন, তরমুজের বীজ অনেকেই ফেলে দেন। তবে এটা নানান পুষ্টি উপাদানে ভরপুর।
হৃদ স্বাস্থ্য: তরমুজের বীজ ম্যাগনেসিয়ামের খুব ভালো উৎস। এটা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদ স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও হৃদগতির ছন্দ ধরে রাখতে এটা উপকারী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। তরমুজের বীজে রয়েছে এ উপাদান। এটা সংক্রমণসহ অন্যান্য অসামঞ্জস্যতার বিরুদ্ধে কাজ করতে সহায়তা করে।
হজম স্বাস্থ্য উন্নত করে: তরমুজের বীজে রয়েছে আঁশ এবং অপরিশোধিত চর্বি; যা হজমে সহায়তা করে। ফলে পেট পরিষ্কার থাকে।
ত্বক ও চুল ভালো রাখে: তরমুজের মাস্ক যেমন ত্বক সতেজ রাখে; একইভাবে এর বীজ ত্বক ও চুলের উপকার করে। তরমুজের বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ত্বক ও চুল সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এটা প্রদাহ ও ব্রণ কমাতে পারে।
হাড়ের সুস্থতা: তরমুজের বীজে রয়েছে ক্যালসিয়াম, যা হাড় সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। হাড় ছাড়াও পেশির কার্যকারিতা বাড়াতে ও স্নায়ু সচল রাখতে এটা উপকারী।
বীজ খাওয়ার উপায়: তরমুজের বীজ কাঁচা না ভেজে খেতে হবে, এটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। উত্তর হলো- তরমুজের বীজ রান্না করে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া তরমুজের দানা রোদে শুকিয়ে রেখে পরে ওভেনে বেইক করে সামান্য লবণ বা অন্যান্য উপাদান মিশিয়েও খাওয়া যায়। এছাড়াও তরমুজের বীজ গুঁড়া করে তা সালাদ বা অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
অঙ্কিতা ঘোষাল বলেন, নিয়মিত তরমুজের বীজ খাওয়া যায়। কেননা এটা ভিটামিন, আঁশ, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিনের ভালো উৎস। তবে এতে ক্যালরি থাকায় প্রচুর পরিমাণে না খাওয়াই ভালো। দৈনিক ৩০ গ্রাম বা এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ খাওয়া উচিত।
কিছু ক্ষেত্রে এড়ানো উচিত: তরমুজের দানায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। তাই যাদের পাকস্থলিতে সমস্যা রয়েছে যেমন অনিয়মিত মল ত্যাগ- তাদের তরমুজের বীজ না খাওয়াই ভালো। এতে রয়েছে অ্যালার্জিক উপাদান। তাই যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের এই বীজ না খাওয়াই উত্তম। থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা ‘কিডনি’ বা বৃক্ক যাদের দুর্বল তাদের জন্য ক্ষতিকর। তাই বৃক্কে সমস্যা থাকলে পরিমিত পরিমাণে তরমুজের বীজ খেতে হবে। নিয়মিত তরমুজের বীজ খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো।