চাঁদপুরের প্রাচীণ মসজিদটি সংরণে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে: দীপু মনি
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সদর উপজেলায় উদ্ধার হওয়া সুলতানি আমলের মসজিদটি রোববার পরিদর্শন করেন ডা. দীপুমনি এমপি। ছবি: সমকাল
চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোট সুন্দর গ্রামে জঙ্গল পরিষ্কার করে উদ্ধার হওয়া সুলতানি আমলের মসজিদটি পরিদর্শন করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি এমপি। চাঁদপুর-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য রোববার সকালে মসজিদটি পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, একটা বই পড়ে জানতে পারি যে, আমার পৈতৃক এলাকা রামপুর ইউনিয়নের ছোট সুন্দর গ্রামে একটি পুরানো ঐতিহ্যবাহী মসজিদ আছে। পরে আমি মসজিদটির ব্যপারে খোঁজখবর নিতে থাকি এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করি। পরে চেয়ারম্যান মসজিদটি উদ্ধার করতে সম হন।
ডা. দিপু মনি আরও বলেন, মসজিদটির ব্যপারে বিভিন্ন পত্রপত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হলে আমি জেলা প্রশাসনকে এটি সংরণের জন্য পদপে নিতে বলি। ইতিমধ্যে ওনারা এবং প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের কর্মকর্তারা সরজমিনে মসজিদটি দেখেছেন। এটি যে সুলতানি আমলের মসজিদ প্রাথমিকভাবে তারা সেটি সনাক্ত করে গেছেন।
ইতিহাস-ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রাচীণ এই মসজিদকে ঘিরে পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য যতো দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়গুলোর সঙ্গে কথা বলে যা যা করণীয় তা করার চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারী, বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আল মামুন পাটওয়ারী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আবু বকর তালুকদার, আল্ফু মিয়া তালুকদার ও ইব্রাহীম হোসেন বাচ্চু মিয়াজী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা কামাল, সহ-সভাপতি সৌরভ হোসেন পাটোয়ারী ও উত্তম রায়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন জাকির পাটোয়ারী, উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও ইউপি সদস্য আনোয়ারা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক প্রমুখ।
গত ৩০ আগস্ট চাঁদপুর সদর উপজেলার ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদার বাড়ি এলাকায় জঙ্গল পরিষ্কার করে প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো ওই মসজিদ উদ্ধার ও দৃশ্যমান হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন বলেন, তথ্য পেয়ে আমি মসজিদটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি, এটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট। দেয়াল ঘেঁষে চারপাশে চারটি ছোট মিনার রয়েছে। মসজিদটির একটি মেহরাব রয়েছে এবং দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোঁপ রয়েছে। পোড়া ইট, বালি, চুনা এবং সুরকি দিয়ে ভবনটি নির্মিত।
তিনি আরও বলেন, এলাকার প্রয়াত মুরব্বিরা জানিয়েছিলেন সেখানে একটি পুরনো স্থাপনা আছে। কিন্তু কেউই সেখানে যেতেন না। কারণ, মসজিদটির উপরে একটি বিশাল জির গাছ ও তার শেকড়, বাঁশঝাড়, অন্যান্য বনলতা যা ভবনটির বাইরের অংশকে ঢেকে রেখেছিল। পরে আজিজ তালুকদার নামে এক ব্যক্তি ১০-১২ বছর আগে জির গাছটি কেটে সেটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তা করতে পারেননি । কারণ, এটি এতোই ভেতরে ছিল যে; সম্পূর্ণ দৃশ্যমান করা তার একার পে সম্ভব ছিল না। তিনি অবশ্য স্থানীয় লোকজনকে স্থাপনাটি সম্পর্কে জানান। কিন্তু ভয়ে কেউ মসজিদটিকে দৃশ্যমান ও সংরণের উদ্যোগ নেননি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিষয়টি জানার পর এটিকে দৃশ্যমান করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দেন।