আজ,
শনিবার , ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ১৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দরাত ১২:৫০
নোটিশ বোর্ড
সর্বশেষ
কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।এটি আদায় করা ওয়াজিব সামর্থ থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করেনা তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেনঃ যার কোরবানির সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। মুস্তাদরাক হাকেম হাদিস নং৩৫১৯, আত তারগীব ওয়াত তারহীব ২/১৫৫
#কার উপর কুরবানী ওয়াজিবঃ
প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পূর্ণ প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা- পয়সা, সোনা-রুপা, অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও ও প্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত(৭.৫) ভরি, রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা-রূপা কিংবা টাকাপয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।
(আল মুহিতুল বুহানী ৮/৪৫৫, ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫ )
#নেসাবের মেয়াদঃ
কোরবানির পুরো বছর থাকা জরুরি নয়, বরং কোরবানির তিন দিনের মধ্যে যেকোনো দিন থাকলেই কোরবানি ওয়াজিব হবে।
(বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, রুদ্দুল মুহতার ৬/৩১২)
#কোরবানির সময়ঃ
মোট তিন দিন কোরবানি করা যায় জিলহজের ১০,১১ও১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তবে উত্তম হল ১০ তারিখে কুরবানী করা উত্তম।
(মুয়াত্তা মালেক ১৮৮, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৯৫)
#নাবালকের কোরবানিঃ
নাবালেগ শিশু-কিশোর তদ্রুপ যে সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন নয়, নিসাবের মালিক হলেও তাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। অবশ্য তার অভিভাবক নিজ সম্পদ দারা তাদের পক্ষে কোরবানি করলে তা সহীহ হবে।(বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬)
#মুসাফিরের জন্য কোরবানিঃ
যে ব্যক্তি কোরবানীর দিনগুলোতে মুসাফির থাকবে (অর্থাৎ ৪৮ মাইল বা প্রায় ৭৮ কিলোমিটার দূরে যাওয়ার নিয়তি এলাকা ত্যাগ করেছে) তার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।
(ফতুয়ায় কাযীখান ৩/৩৪৪)
#নাবালকের পক্ষ থেকে কোরবানিঃ নাবালেগের পক্ষ থেকে কুরবানী দেওয়া অভিভাবকের ওপর ওয়াজিব নয়, বরং মুস্তাহাব।
(ফাতাওয়া কাযীখান৩/৩৪৫)
#দরিদ্র ব্যক্তির কুরবানীর হুকুমঃ দরিদ্র ব্যক্তির উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়, কিন্তু সে যদি কোরবানির নিয়তে কোন পশু কিনে তাহলে তা কোরবানি করা ওয়াজিব হয়ে যায়। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯২)
#প্রথম দিন কখন থেকে কোরবানি করা যাবেঃ
যেসব এলাকার লোকদের ওপর জুমা ও ঈদের নামাজ ওয়াজিব তাদের জন্য ঈদের জামাতের আগে কোরবানি করা জায়েজ নয়। অবশ্যই বৃষ্টি-বাদল বা অন্য কোন ওজর যদি প্রথম দিন ঈদের নামাজ না হয় তাহলে ঈদের নামাজের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম দিন ও কুরবানী করা জায়েয।
(সহীহ বুখারী ২/৮৩২)
#কোন কোন পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবেঃ
উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এসব গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ বন্যগরু ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়।
( কাযীখান ৩/৩৪৮)
#নর ও মাদি পশুর কুরবানীঃ
যেসব পশু কোরবানি করা যায় সেগুলোর নর-মাদা দুটোই কোরবানি করা যায়। (কাযীখান ২/৩৪৮)
#কোরবানির পশুর সময়সীমাঃ
উট কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে দুই বছর হতে হবে। আর ছাগল ভেড়া ও কমপক্ষে এক বছর হতে হবে। তবে ভেড়াও দুম্বা এক বছরের কিছু কমে হয় কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে দেখতে এক বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দারাও কোরবানি করা জায়েজ। অবশ্যই এক্ষেত্রে কমপক্ষে ছয় মাস বয়সের হতে হবে। উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স এক বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানী জায়েজ হবে না।
(কাজীখান ৩/৩৪৮)
#এক পশুতে শরীকের সংখ্যাঃ একটি ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা শুধু একজনই কোরবানি দিতে পারবে। এমন একটি পশু কয়েকজন মিলে কোরবানি করলে কারো হবে না। আর উট, গরু-মহিষ সর্বোচ্চ ৭ জন শরিক হতে পারবে। ৭ এর অধিক শরীক হলে কারও কোরবানি সহীহ হবে না।
( সহীহ মুসলিম হাদিস নং ১৩১৮, মুয়াত্তা মালেক ১/৩১৯ )
সাতজন মিলে কুরবানী করলে সবার অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেয় ভাগ। এমন হলে কোন শরীকের কোরবানি সহীহ হবেনা।
(বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭)
উট,গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং হাতের কমে যেকোন সংখ্যা যেমন ২, ৩, ৪, ৫, ও ৬ ভাগে কুরবানী করা জায়েয
(সহীহ মুসলিম ১৩১৮)
#কোন অংশীদারের গলদ নিয়ত হলেঃ
যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কোরবানি না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কোরবানি করে তাহলে তার কোরবানি সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরিকদের কারো কোরবানি হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরিক নির্বাচন করতে হবে।
(বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮)
#কুরবানীর পশুতে আকিকার অংশঃ
কোরবানির গরু, মহিষ ও উঠে আকিকার নিয়তে শরিক হতে পারবে এতে কোরবানি ও আকিকা দুটোই সহীহ হবে।
(তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২)
#শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কোরবানি হবে না।
#যদি কেউ গরু, মহিষ, উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়তে কিনে আর সে ধনী হয় তাহলে ইচ্ছা করলে অন্যকে শরিক করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি ওই ব্যক্তি এমন গরিব হয়, যার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়, তাহলে সে অন্যকে শরিক করতে পারবে না। এমন গরীব ব্যক্তি যদি কাউকে শরিক করতে চায় তাহলে পশু ক্রয় এর সময় নিয়ত করে নেবে। (কাযীখান ৩৩৫০,৩৫১)
#কোরবানির উত্তম পশুঃ
কোরবানির পশু স্পষ্ট হওয়া উত্তম। (মুসনাদে আহমদ সকল ৬/১৩৬)
#রুগ্ন ও দুর্বল পশুর কুরবানীঃ
এমন শুকনো দুর্বল পশু, জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারেনা তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। (জামে তিরমিজি ১/২৭৫, আলমগীরী ৫/২৯৭)
#দাঁত নেই এমন পশুর কোরবানিঃ
যে পশুর একটি দাঁতও নেই বা এত বেশি দাঁত পড়ে গেছে যে ঘাস বা খাদ্য চিবাতে পারেনা এমন পশু দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫)
#যে পশুর শিং ভেঙ্গে বা ফেটে গেছেঃ
যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে যে কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। পক্ষান্তরে যে প্রচুর অর্ধেক বা কিছু শিং ভেঙ্গে গেছে বা শিং একেবারে উঠে নি সে পশু কোরবানি করা জায়েজ। (জামে তিরমিজি ১/২৯৬, সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ৩২৮)
#কান বা লেজকাটা পশুর কুরবানীঃ যে পশুর লেজ বা কোন কান অর্ধেক বা তারও বেশি কাটা সে পশুর কুরবানী জায়েয নয়। আর যদি অর্ধেকের বেশি থাকে তাহলে তার কোরবানি জায়েজ তবে জন্মগতভাবেই যদি কান ছোট হয় তাহলে অসুবিধা নেই। (জামে তিরমিজি ১/২৭৫, মুসনাদে আহমদ ১/৬১০)
#অন্ধ পশুর কুরবানীঃ
যে পশুর দুটি চোখে অন্ধ বা একচোখ পুরো নষ্ট সে পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়।
( জামে তিরমিজি১/২৭৫)
#গর্ভবতী পশুর কুরবানীঃ
গর্ভবতী পশু কোরবানি করা জায়েজ। জবাইয়ের পর যদি বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তাহলে সেটাও জবাই করতে হবে। তবে প্রসবের সময় আসন্ন হলে সে পশু কোরবানি করা মাকরুহ। (কাযীখান ৩/৩৫০)
#পশু কেনার পর দোষ দেখা দিলেঃ কোরবানির নিয়তে ভালো পশু কেনার পর যদি তাতে এমন কোনো দোষ দেখা দেয় যে কারণে কোরবানি জায়েজ হয় না তাহলে ওই পশুর কোরবানি সহিহ হবেনা। এর স্থলে আরেকটি পশু কোরবানি করতে হবে। তবে ক্রেতা গরীব হলে ত্রুটিযুক্ত পশু কোরবানি করতে পারবে।(রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫)
#বন্ধ্যা পশুর কুরবানীঃ
বন্ধ্যা পশুর কোরবানি জায়েজ।( রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫)
#নিজের কোরবানির পশু নিজে জবাই করাঃ
কোরবানির পশু নিজে জবাই করা উত্তম। নিজে না পারলে অন্যকে দিয়েও জবাই করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোরবানি দাতা পুরুষ হলে জবাইস্থলে তার উপস্থিতি থাকা ভালো। (মুসনাদে আহমদ ২২৬৫৭)
#কোরবানির পশুর দুধ পান করাঃ কোরবানির পশুর দুধ পান করা যাবে না। যদি জবাইয়ের সময় আসন্ন হয় আর দুধ দোহন না করলে পশুর কষ্ট হবে না বলে মনে হয় তাহলে দহন করবে না। প্রয়োজনে ওলানে ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দেবে এতে দুধের চাপ কমে যাবে। যদি দুধ দোহন করে ফেলে তাহলে তা সদকা করে দিতে হবে। নিজে পান করে থাকলে মূল্য সদকা করে দিবে। (মুসনাদে আহমদ ২/১৪৬)
#কোন শরীফের মৃত্যু ঘটলেঃ কয়েকজন মিলে কোরবানি করার ক্ষেত্রে জবাই এর আগে কোন শরীকের মৃত্যু হলে তার ওয়ারিশরা যদি মৃত্যুর পক্ষে থেকে কোরবানি করার অনুমতি দেয় তবে তা জায়েয হবে। নতুবা ওই শরিকের টাকা ফেরত দিতে হবে। অবশ্য তার স্থলে অন্যকে শরিক করা যাবে। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯)
#কোরবানির পশুর বাচ্চা হলেঃ কোরবানির পশু বাচ্চা দিলে ওই বাচ্চা জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। যদি সদকা না করে তবে কোরবানির পশুর সাথে বাচ্চাকেও জবাই করবে এবং গোস্ত সদকা করে দেবে।
(কাজী খান ৩/৩৪৯, আলমগীরী ৫/৩০১)
#মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানীঃ
মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কোরবানি হিসেবে গণ্য হবে কোরবানির স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে। এবং আত্মীয়স্বজন কেউ দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না গরীব মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। মুসনাদে আহমদ ১/১০৭, কাযীকান ৩/৩৫২)
#কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখাঃ কোরবানির গোশত তিনদিনেরও অধিক দিন জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েজ।
(বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪)
#কোরবানির গোশত বন্টনঃ
শরিকে কোরবানি করলে ওজন করে গোশত বন্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা জায়েয নয়।
(কাযীখান ৩/৩৫১)
কোরবানির গোশতের এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশী কে দেয়া উত্তম অবশ্যই যদি নিজেরা রেখে দেয় তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪)
#জবাইকারীকে চামড়া গোশত দেওয়াঃ
জবাইকারী কসাই বা কাজে সহযোগিতা কারী কে চামড়া বা কোরবানির পশুর কোন কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েজ হবে না । অবশ্যই পূর্ণ পারিশ্রমিক দেওয়ার পর পূর্ব চুক্তির ছাড়া হাদিয়া হিসাবে গোশত বা তরকারি দেওয়া যাবে।
#কোরবানির গোশত বিধর্মীকে দেওয়াঃ
কোরবানির গোশত হিন্দু ও অন্য ধর্মাবলম্বী কি দেওয়া জায়েজ। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৩০০)
অন্যের ওয়াজিব কুরবানী দিতে চাইলে ওই ব্যক্তির অনুমতি নিতে হবে নতুবা ওই ব্যক্তির কুরবানী আদায় হবে না অবশ্যই স্বামী বা ফিতা যদি স্ত্রী বা সন্তানের বিনা অনুমতিতে তার পক্ষ থেকে কুরবানী করে তাহলে তাদের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে তবে অনুমতি নিয়ে আদায় করা ভালো
#নিজের কোরবানির গোশত খাওয়াঃ
কোরবানি দাতার জন্য নিজে কোরবানির গোশত খাওয়া মুস্তাহাব। (সূরা হজ্জ আয়াত ২৮ )
#ঋণ করে কোরবানি করাঃ কোরবানি ওয়াজিব এমন ব্যক্তিও ঋণের টাকা দিয়ে কোরবানি করলে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। তবে সুদের উপর ঋণ নিয়ে কোরবানি করা যাবে না।
#নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে কুরবানী করাঃ
সামর্থ্যবান ব্যক্তির রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে কুরবানী করা উত্তম। এটি বড় সৌভাগ্যের বিষয় বটে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলাকে তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করার ওসিয়ত করে ছিলেন। তাই তিনি প্রতিবছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকেও কোরবানি দিতেন।
( সুনানে আবু দাউদ ২/২৯)
#খাসি কৃত ছাগল দ্বারা কোরবানিঃ খাসি ছাগল দ্বারা কুরবানী করা উত্তম।
(ফাতহুল কাদির ৮/৬৯৮)
#জীবিত ব্যক্তির নামে কোরবানিঃ যেমনি ভাবে মৃতের পক্ষ থেকেই ইসালে সওয়াব এর উদ্দেশ্যে কুরবানী করা জায়েয। জীবিত ব্যক্তির পক্ষ থেকেও তার ঈসালে সওয়াবের জন্য নফল কোরবানি করা জায়েজ। কোরবানির গোশত দাতা ও তার পরিবার ও খেতে পারবে। বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির কুরবানী অন্যত্রে করা যাবে বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির জন্য নিজেদের সেবা অন্য কোথায়ও কোরবানি করা জায়েজ।
#কোরবানির চামড়া বিক্রির অর্থ সদকা করাঃ
কোরবানির চামড়া কুরবানীদাতা নিজেও ব্যবহার করতে পারবে। তবে কেউ যদি নিজে ব্যবহার না করে বিক্রি করে তবে বিক্রিলব্ধ মূল্য পুরোটা সদকা করা জরুরি।
( রদ্দুল মুহতার ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৩০১)
#কোরবানির গোশত দিয়ে খানা শুরু করাঃ
ঈদুল আযহার দিন সর্বপ্রথম কোরবানির গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত। অর্থাৎ সকাল থেকেই কিছু নাখেয়ে প্রথমে কোরবানির গোশত খাওয়া সুন্নত। এই সুন্নত শুধু ১০ জিলহজের জন্য। ১১ বা ১২ তারিখের গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত নয়।
(জামে তিরমিজি ১/১২০)
#কাজের লোককে কোরবানির গোশত খাওয়ানোরঃ
কোরবানির পশুর কোন কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েজ নয়। গোশতও পারিশ্রমিক হিসেবে কাজের লোককে দেয়া যাবে না। অবশ্যই এ সময় ঘরের অন্যান্য সদস্যদের মতো কাজের লোকদের কে গোশত খাওয়ানো যাবে। (আহকামুল কুরআন ৩/২৩৭)
#জবাইকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়াঃ কোরবানির পশু জবাই করে পারিশ্রমিক দেওয়া-নেওয়া জায়েজ। তবে কোরবানির পশুর কোন কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেয়া যাবেনা। (কেফায়াতুল মুফতি ৮/২৬৫)
#মোরগ কোরবানি করাঃ
কোন কোন এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে মোরগ কোরবানি করার প্রচলন আছে। এটি নাজায়েজ। কুরবানীর দিনে মোরগ জবাই করা নিষেধ নয়। তবে কোরবানির নিয়ত করা যাবে না।
( ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/২০০)
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।