ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদ গঠন করার জন্য চার সদস্যের কমিটিতে এক সচিবের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সাবেক তিন সচিবের নাম হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মাকছুদুর রহমান পাটোয়ারী, স্থানীয় সরকার (স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের) মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান ও সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী।
এর মধ্যে একজনকে রাখা হবে কমিটিতে। সে হিসেবে নামের এ তালিকা আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এখান থেকে নাম সিলেক্ট করে আদালত একজনকে বোর্ডে পাঠাবেন। আদালত চাইলে এর বাইরে থেকেও নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এ ছাড়া একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও একজন আইনজীবী সিলেক্ট করবেন আদালত। এ বিষয়ে আগামী ১৭ বা ১৮ অক্টোবর শুনানি করে ওইদিন কমিটি গঠন করতে পারেন হাইকোর্ট। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার, প্রতিযোগিতা কমিশনের আইনজীবী তাপস কান্তি বল। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিষয়ে ওঠা প্রতারণার অভিযোগ ও পরিচালনার নিয়ম পর্যালোচনা করতে চার সদস্যের বোর্ড গঠন এবং নথি নিয়ে আজ হাইকোর্টের আদেশের নির্ধারিত দিনে বুধবার (১৩ অক্টোবর) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেন। আদালতে আজ শুনানি করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার, প্রতিযোগিতা কমিশনের আইনজীবী তাপস কান্তি বল। অন্যদিকে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন। এর আগে মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বোর্ড গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তিনজনের নাম উল্লেখ করে প্রস্তাব আদালতে পাঠানোর জন্য বলেছিলেন। পরে এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য বুধবার দিন ঠিক করা হয়। ইভ্যালির দুই কর্ণধার কারাগারে থাকায় এ বোর্ড বা কমিটি গঠন করতে আদেশ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবীরা। এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর এক আদেশে ১২ অক্টোবরের মধ্যে ইভ্যালির নথিপত্র আদালতে দাখিল করতে রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। সে অনুযায়ী নথি দাখিল করা হয়। আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন, সব নথি দাখিল করা হয়েছে। যেহেতু এ কোম্পানির দুজন মালিকই জেলে, তাই একটি কমিটি গঠনের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন আদালত। কমিটিতে তিনজনের নাম পাঠানোর জন্যে বলা হয়েছে। আমরা নাম পাঠাবো। এ বিষয়ে আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। এর আগে এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের নথি তলব করা হয়। আবেদনকারী ইভ্যালিতে গত মে মাসে একটি ওয়াশিং মেশিন অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি অর্থ পরিশোধ করেন মোবাইল ফোনভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনায় ৩৩ হাজার ৩০৮ টাকার রসিদও দেয়। কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। পণ্য বুঝে পেতে আবেদনকারী যোগাযোগ করলে তাকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু পণ্য বুঝিয়ে দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি। পরে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকারে কয়েকবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন এবং হাইকোর্টে কোম্পানিটির অবসায়ন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, কনজুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়। |