গত বছর এই দিনে ৫ মে ২০২০ সালের ১১ রমজান আমার বাবা মোঃ নুরুল হক মৃত্যুবরণ করেন দুপুর দুটায় নিজ বাড়ী মধ্য বড়কুলে। মাহামারী করোনাকালীন থাকায় বেশি জানাজানি করা যায়নি। তার পরেও এলাকাবাসী বাবার জানাজায় উপস্থিত হয়ে প্রমান করে দিয়েছেন আমার বাবা অত্যান্ত ভালো মানুষ ছিলেন । আজ ৫ মে আমার বাবার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। সবার কাছে দোয়া চাই আল্লাহ যেনো আমার বাবাকে বেহেস্ত বাসী করেন।
১. আমাদের বংশের পূর্বসুরী মোঃ ইউসুফ বেপারী। বিটিশ আমালে তিনি জমিদার বা উপজেলার মধ্যে একজন ধনী ছিলেন। তিনি একজন বড় ব্যবসায়ি ছিলেন। তিনি এলাকার বড়মানের একজন সমাজ সেবক ও দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মধ্য বড়কুল মুসল্লিদের ঈদের জামায়াত আদায় করার জন্য মধ্য বড়ুকল দারুসসালাম জামে মসজিদের ঈদের জামায়াত পড়ার জন্য অনেক জায়গা দিয়েছেন। তার একাধিকবাড়ী ছিল। তাঁর উত্তরসুরী পর্যায়ক্রমে অনেক বংশধর হয়েছেন। তাদের ধারাবাহিকতায় সবাই অর্থ-সম্পদের মালিক । তারাও এলাকার মধ্যে বিত্তবান হিসেবে পরিচিত। রয়েছে নিজ নিজ নামে এক একটা বাড়ী। যা সাবার কাছে খুবই পরিচিত এবং ধনীর প্রভাব।
যেমন, কাদের বেপারী,ইসমাইল বেপারী, মফিজ উদ্দিন বেপারী, কাশেম আলী বেপারী, হামিদ আলী বেপরী, ফজর আলী বেপারী জলিল বেপারী, মুসলিম বেপারী, আমিন বেপারী, আমির হোসেন বেপারী(সাবেক চেয়ারম্যান) নুরুল হক বেপারী, খালেক বেপারীসহ আরো অনেকে। ধনীপরিবারে সন্তান এবং নিজেরাও ধনী। এক এক জন ব্যক্তির ৭শ থেকে ২ হাজার এককর জায়গার মালিক ছিলেন। এককথায় বলা জায় পূর্বপুরুষ থেকে শুরু করে অধ্যবধি সবাই ধনী। যা এলাকায় দৃশ্যমান রয়েছে।
২.আমার দাদার নাম কাশেম আলী বেপারী। তিনি পূর্বের বংশধর থেকে অংশিদার সম্পদ এবং নিজে ক্রয় সম্পদ মিলে ১৪-১৫শ একর জায়গার মালিক হন। ছিল অনেকগুলো গরু। তার ঘনিষ্ট বন্ধু ছিল আমাদের পাশের মসজিদ বাড়ীর আবদুল করিম বেপারী। তিনিও একজন ধনী পরিবারের সন্তান। কাশেম আলী বেপারীর দু ছেলে। মোঃ নুরুল হক বেপারী ও মোহাম্মদ হোসেন বেপারী। দু ভাইয়ের মধ্যে সম্পদক ভাগ করে এক এক জন পেয়েছেন ৬-৭শ একর মতো সম্পদ। এর মধ্যে মোহাম্মদ হোসেন কিছু জায়গা বিক্রি করলে মোঃ নুরুল হক তা ক্রয় করে নেন।
৩. আমার দাদা কাশেম আলী বেপারী ২ সন্তান রেখে কম বয়সে মৃত্যুরণ করলে তার সম্পত্তিসহ সংসার রক্ষার জন্য কেউ নেই। তখন আমার দাদার বন্ধু মসজিদ বাড়ীর আবদুল করিম বেপারী নিজের বড় মেয়েকে বন্ধু কাশেম আলী বেপারীর বড় ছেলে মোঃ নুরুল হকের কাছে বিয়ে দিয়ে সম্পত্তি দেখবাল করেন। দাদার রেখে যাওয়ার সকল দায়িত্ব পালন করেন নানা আবদুল করিম বেপারী এবং দুই মামা ইব্রাহীম হামিদ মুন্সী। বাবা লেখা পড়া করার পর চাকরী করেন হাজীগঞ্জ হামিদিয়া জুট মিলে মেকানিক্যালে। একদিকে নানার সাথে পারিবারিক সম্পত্তি রক্ষা অপরদিকে চাকুরী চালিয়ে গিয়েছে।
৪.আমার বাবার ঘরে আমরা ৫ ভাই-৫ বোন সর্বমোট ১০ জন। প্রথমে সুলতানা আক্তার রেজিয়া, মোঃ হুমায়ূন কবির, মোঃ আলমগীর,সুলতানা আক্তার লাখী, মোঃ কামাল হোসেন,তাসলিমা আক্তার,ফারুকুল ইসলাম,সুলতানা আক্তার মনি,মনজুরুল হক ও পান্না আক্তার। (ছোট বোন পান্না আক্তার মেজে ভাই আলমগীরের বাসায় রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়)। বর্তমানে ৫ ভাই ও ৪ বোন জীবিত। সবাই লেখা পড়া শেষ করে কর্মজীবন নিয়ে ব্যস্ত। ভাই ও বোন সবাই বিবাহিত। বোনদের সন্তানরাও উচ্চ শিক্ষিত বা অনেকে লেখা পড়া করছে। ভাইদের মধ্যে সবার সন্তান রয়েছে এবং তারা লেখা পড়া করছে। এর মধ্যে তিন ভাইয়ের স্ত্রী চাকুরী জীবি।
৫.আমার বাবা ব্যক্তি জীবনে অত্যান্ত একজন সৎ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি অসংখ্য মানুষকে সহযোহিতা করেছেন। তাঁর সহযোগিতায় অনেকে লেখা পড়া করে দেশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। কর্মজীবনে যেমন সফল এবং পারিবারিক জীবনেও সফল। আমার বাবা সবসময় বলতেন কখনো কাহারো সাথে সম্পর্ক নষ্ট করবা না। অবৈধ পন্থায় কোন অর্থ উপার্জন করবে না। সব সময় সুনাম অর্জন করবে। মানুষকে সহযোগিতা করবে। বাবার কথা পালনের জন্য চেষ্ঠা করে যাচ্ছি। আামদের আয় দিয়ে সবসময় আমরাও বাবা-মা জন্য সামর্থ্যর মধ্যে থেকে চেষ্ঠা করেছি সকল ধরণের সহযোগিতা করার জন্য। আমার বাবা- মা দুজনেই রমজান মাসে মৃত্যুবরণ করেন। যা একটি ইতিহাস। আল্লাহ আমার বাবা-মাকে শান্তিতে রাখিবেন।
মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সম্পাদক- সাপ্তাহিক আমার কণ্ঠ,হাজীগঞ্জ,চাঁদপুর।