যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসাবে আজ দশ সাংগঠনিক বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করছে বিএনপি। সমমনা দলগুলোও একযুগে এই কর্মসূচি পালন করছে।
দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয়েছে। বিএনপির পাশাপাশি সমমনা দল ও জোটও ঢাকায় সমাবেশ করছে। সমাবেশ থেকে জনসম্পৃক্ত নানা ইস্যুতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। দেশব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি দেওয়ার পক্ষে অনেকেই মত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। আবার নেতাদের কেউ কেউ চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণার দিকে জোর দিয়েছেন।
গত ২৫ জানুয়ারি রাজধানী নয়াপল্টনের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস; সরকারের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতন বন্ধ, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপণ্যের দাম কমানোসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে বিভাগীয় সদরে সমাবেশের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব। এদিন আলাদা সমাবেশ থেকে একই কর্মসূচি ঘোষণা করে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলের জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, চার দলের বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য এবং ১৫ সংগঠনের সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট।
বিএনপির ঢাকার সমাবেশে প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কুমিল্লায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রাজশাহীতে মির্জা আব্বাস, খুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরিশালে ড. আব্দুল মঈন খান, চট্টগ্রামে নজরুল ইসলাম খান, ময়মনসিংহে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিলেটে বেগম সেলিমা রহমান, ফরিদপুরে ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু ও রংপুরে মোহাম্মদ শাহজাহান। জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতাদেরও নিজ নিজ বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক ও ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স কর্মসূচির বিষয়ে যুগান্তরকে শনিবার বলেন, ‘৪ ফেব্রুয়ারি সমাবেশের মাধ্যমে আমরা চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করব। এ রকম চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাকের জন্য সবাই উন্মুখ হয়ে আছেন।
নির্যাতিত-নিপীড়িত জনতার দাবির মুখে আমাদের কর্মসূচি এখন চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে ধাবিত হচ্ছে’। তিনি বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে চলমান আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার জন্য কীভাবে আবার জনসাধারণকে উদ্ধুব্ধ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত তৃণমূল পর্যায়ে পদযাত্রা, পথসভা, হাটসভা, প্রচারপত্র বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে’।
তিনি জানান, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস-চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিবদের সমন্বয়ে প্রতিটি বিভাগীয় সমাবেশে একটি টিম অংশ নেবে।
বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা জানান, গত বছরের শেষদিকে দশটি বিভাগীয় গণসমাবেশ তৃণমূলকে ব্যাপকভাবে উজ্জীবিত করে। জনসম্পৃক্ত ওই কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মীর পাশাপশি সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণও ছিল অনেক বেশি। বিশেষ করে ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ গণসমাবেশ ঘিরে দলের নেতাকর্মী ছাড়াও মুক্তিকামী জনগণের মধ্যে বড় ধরনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুগান্তরকে বলেন, ‘দলের প্রতিটি কর্মসূচিতেই নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক সাধারণ জনগণ অংশ নিচ্ছেন। কারণ, বর্তমান অবৈধ সরকারকে জনগণ আর চায় না। তারা সবকিছুতেই ব্যর্থ। তাই তাদের পদত্যাগ করতেই হবে, ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে। দশ দফা দাবি আদায়ে বিএনপির আন্দোলন চলছে। শান্তিপূর্ণ এ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমরা সরকারের পতন ঘটাব।’
সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক শক্তি পরীক্ষায় ইতোমধ্যে ৪ দিনের পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। যা শনিবার শুরু হয়েছে, চলবে পহেলা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ কর্মসূচি চলাকালীন সময়েই দশ সাংগঠনিক বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা অবস্থান করছেন। সমাবেশ সফল করতে তারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে জনসাধারণকে উদ্বুব্ধ করতে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়াল বৈঠকও করেছেন।