কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা থেকে মতলবগামী মতলব এক্সপ্রেসের একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে ২ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর অহত অবস্থায় ৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
১১ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে। দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের হাবিলদার আশরাফুল আলম এ কথা নিশ্চিত করেছেন।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুমন জানান, প্রায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা থেকে মতলবগামী মতলব এক্সপ্রেস নামে একটি যাত্রীবাহী বাস গৌরীপুর স্টেশনে পৌঁছালে হঠাৎ করে বিকটশব্দে বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে বাসটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। নামতে না পেরে বাসের ভেতরেই দুইজন যাত্রী পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
নিহতরা হলেন দাউদকান্দির দলুয়াকান্দি গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে সাফিন (৪) ও দাউদকান্দির তিনপাড়া গ্রামের আহাদ উল্লাহর ছেলে রফিকুল ইসলাম।
গুরুতর আহতরা হলেন- মামুন, হালিমা খাতুন, রাজিব, বিশ্বনাথ, বিপ্লব সরকার, সামছুন্নাহার, সৈয়দ রাসেল মীর, তাহমীনা। এই ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ও দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন গোলাম হোসেন, রাজিব, মইন উদ্দিন, রিয়াদ, সানজেনা, শাহিনূর, জেরিন,রুহুল আমিন, রওশন আরা , তাহিয়া, তাসনিয়া আবদুর রহিম, হালিম।
ডা. সুমন জানান, দুর্ঘটনার পর উপস্থিত জনতা ২১ জন দগ্ধ আহত যাত্রীকে প্রথমে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু এর মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। আর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১০ জনকে বাড়িতে পাঠানো হয় এবং ২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানান, মতলব এক্সপ্রেসের বাসটি গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করার সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যর ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফলে আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি।
দুর্ঘটনার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কুমিল্লার দাউদকান্দির পাপিয়া পরিবহনের যাত্রী কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী আনিকা সুলতানা বলেন, ‘রাতের বেলায় যানজটে আটকে থেকে গাড়ি থেকে নেমে নিরাপত্তার অভাবে হাঁটতেও পারছি না। অথচ কষ্ট পাচ্ছি।’
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি জহিরুল হক বলেন, লাশগুলো দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেছেন, নিহত দুইজন স্থানীয়। তাদের পরিচয় পাওয়া গেছে। তবে এই মুহূর্তে কিছুই বলতে পারবো না।